স্টাফ রিপোর্টারঃ জাটকা মাছ ধরা থেকে বিরত থাকায় জেলেদের মধ্যে ভিজিএফ’র বরাদ্দকৃত ৪০ কেজি চাল বিতরণে ৩০ কেজি করে দেয়াসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
১৭ মে বুধবার সকালে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ৫নং হাইমচর ইউনিয়ন পরিষদের চাল বিতরণে এই অভিযোগ পাওয়া যায়।
জানা যায়, হাইমচরের ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার আলি জুলহাস সরকার সকালে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও ইউনিয়নের তদারকি কর্মকর্তা(ট্যাগ অফিসার) এর উপস্থিতিতে ৪০ কেজি চাল দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তবুও ইনটেক বস্তা খুলে জনপ্রতি দুই মাসের চাল ৩০ কেজি হারে ৬০ কেজি করে বালতি দিয়ে দেয়ায় জেলেরা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা বলেন, আমাদের ২ মাসের ৮০ কেজি করে চাউল দেওয়ার কথা থাকলেও দেয়া হচ্ছে মাত্র ৬০ কেজি করে চাল। অর্থাৎ ২০ কেজিই নাই। আমরা চাল ওজনে কম দেওয়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকদের অবহিত করেছি।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল ও অনিয়মের মূল ঘটনা। স্থানীয় মহিলারা বলেন, দালালদের মাধ্যমে টোকেন করে টাকা নিয়ে টোকেন অনুযায়ী চাউল দেয়া হচ্ছিলো ইউনিয়ন পরিষদে। বিক্রিত টোকেন জমা নিয়ে জেলেদের চাউল কম দিয়ে বিক্রেতাদের চাউল দিচ্ছেন বলে অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন। এছাড়াও প্রতিবারের চাল বিতরণে জেলেদের কাছ থেকে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করে চৌকিদারি টেক্স নামে ১’শত টাকা করেও চাঁদা আদায় করা হয়েছে বলেও ভুক্তভোগী জেলেরা জানিয়েছেন। আর তাই জেলে চাউল গোডাউনে না তুলে ট্রলারে করে নদীতে রেখে স্কেল বিহিন, বালতী মেপে চাউল দিচ্ছে বলে জানান অসহায় জেলেরা।
যদিও এ বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে হাইমচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার সাইফুল দেওয়ান ও ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার মনির বলেন, বিভিন্ন খরচ নির্বাহের জন্য মৎস্য ও ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে ২০ কেজি করে চাল কম দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জুলফিকার আলি জুলহাস সরকার বলেন, আমরা জনপ্রতি জেলেকে ৮০ কেজির পরিবর্তে ৬০ কেজি চাল বিতরণ করছি তথ্য সঠিক। কেননা চাল ঘাটতি, শ্রমিকদের মজুরী ও কার্ড বঞ্চিত হতদরিদ্র দুঃস্থদের মধ্যেও চাল বিতরণ করতে হচ্ছে। আর তাই সমন্বয়ের মাধ্যমে বিতরণের জন্য ২০ কেজি করে চাল কম দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে হাইমচর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মাহবুব রশীদ বলেন, আমি কার্ডধারী জেলেদের ৮০ কেজি করে চাল দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। ইউপি চেয়ারম্যান যদি কম দিয়ে তাকে সেটা আমার দায় নয়, তবুও আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।
এদিকে জেলেদের সাথে চাল বিতরণে এমন অনিয়মের কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়ে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলে প্রতিনিধি মানিক দেওয়ান বলেন, জেলেদের ২০ থেকে ১৬ কেজি করে চাল কম দেয়ার বিষয়টি দুঃখজনক ও হতাশার। আমি অবিলম্বে এই অনিয়মের সাথে জড়িতদের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাই থোয়াইহলা চৌধুরীর মহোদয় এবং বিজ্ঞ জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।